তৃতীয় মোঘল সম্রাট আকবর সম্পর্কে

  

 

ভুমিকা ঃ হিমালয়ান উপমহাদেশে মধ্যযুগের ইতিহাসে মোঘল শাসনামল অতি গুরুত্বপূর্ণ  অধ্যায়। এ উপমহাদেশে মোঘল সাম্রাজ্যের অভ্যুত্থান বলতে গেলে এক নব যুগের সূচনা করে।  প্রাক মোঘল যুগে মুসলিম নৃপতিগণ সুলতানরুপে পরিচিত ছিলেন। কিন্তু মঘলদের অধিপত্য প্রতিষ্ঠার সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা নিজেদের সম্রাট বলে ঘোষণা করেন। মোঘল সম্রাটদের মাঝে বাদশাহ আকবরই সর্বাধিক উল্লেখযোগ্য ও বিতর্কিত ব্যাক্তি। তিনি ছিলেন একজন বিজ্ঞশাসক, সাহসী বীর, অন্যান্য সাধারন সামরিক প্রতিভা সম্পন্ন সেনাপতি ও সামরিক সংস্কারক এবং বাইরের দিক বিবেচনায় শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ রাষ্ট্রনায়ক। তার রাজত্বকাল ছিল পঞ্চাশ বছর ১৫৫৬ থেকে ১৬০৫ খ্রিঃ।







জন্ম ও পরিচয় ঃ ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ শতাব্দীতে আকবরের পিতা হুমায়ন শের শাহের সাথে যুদ্ধে পরাজিত হয়ে ভারতবর্ষ হতে স্ত্রী হামিদা বানুসহ সিন্ধুর ওমরকোর্টের হিন্দু রাজা রানা প্রসাদের রাজ্যে পলায়ন করেন।সেখানে নিবাসিত জীবন যাপনকালে ১৫৪২ খ্রিষ্টাব্দের ২৩ শে নভেম্বর আবুল ফাতাহ জালালুদ্দিন মুহাম্মদ আকবরের জন্ম হয়। কথিত আছে যে,হুমায়ন একটি মৃগনাভি বিতরন করে উপস্থিত আমীরদের নিকট আশা ব্যক্ত করেন যে, তার পুত্রের যশ ও সুখ্যাতি সুগন্ধি মৃগনাভির মত যেন চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। 


আরও পড়ুনঃ মোঘল সম্রাট আকবর সম্পর্কে

১.

২.

৩. 

৪.


প্রাথমিক জীবন ঃ পিতা হুমায়নের মৃত্যুকালে আকবর তার অভিভাবক বৈরাম খানের সাথে পাঞ্জাবের গুরুদাসপুর জেলার একটি শহরে ছিলেন। হুমায়নের মৃত্যুর পর বৈরাম খানের মাত্র ১৩ বৎসর বয়সে ১৪ ই ফেব্রুয়ারী ১৫৫৬ দিল্লীর সিংহাসনে আরোহণ করেন।তার পিতার অতি বিশ্বস্ত সহচর ও বন্ধু বৈরাম খাঁন নাবালক সম্রাটের অভিভাবক নিযুক্ত হন। 






কেন্দ্রিয় শাসনব্যবস্থাঃ সম্রাট আকবর নিজে শাসন ব্যবস্থার শীর্ষে ছিলেন।তার সময় জাতি- ধর্ম নিবিশেষে প্রত্যেক প্রতিভাবন ব্যাক্তি মাত্রই রাজকার্যের উচ্চপদে স্থান পেতেন। ঐতিহাসিক ঈশ্বরি প্রসাদ তাঁকে প্রজা মঙ্গলকারী স্বৈরাচারী শাসক বলে অভিহিত করেন। কেন্দ্রের অধীনস্থ বিভিন্ন মন্ত্রিদের দায়িত্বে নানা বিভাগ ছিল। যেমনঃ ক. অর্থনৈতিক বিভাগ, খ.সমর,বেতন ও হিসাব বিভাগ,গ. বিচার বিভাগ,ঘ. গণচরিত্র পর্যবেক্ষণ বিভাগ, ঙ. অস্ত্র বিভাগ, চ.গুপ্তচর বিভাগ, ডাক বিভাগ ইত্যাদি।






প্রাদেশিক শাসন ব্যবস্থা ঃ শাসন ব্যবস্থাকে সুশৃঙ্খল করার জন্য আকবর তার সুবিসাল সাম্রাজ্যকে ১৫ টি প্রদেশে বিভক্ত করেছিলেন। যিনি প্রদেশের শাসন কর্তা হতেন তাকে নাযিম বলা হত। আর বিচার বিভাগের জন্য প্রধান কাযি তিনি নিজে নিযুক্ত করতেন।আর অন্যান্য কাযিগণ প্রধান কাযি কর্তৃক নিযুক্ত হতেন। 






রাজস্বনীতি ঃ রাজস্ব বিভাগের সংস্কারে শের শাহের আবদান অনস্বীকার্য। পরবর্তীকালে শের শাহের রাজস্ব বাব্যস্থার উপর ভিত্তি করে আকবর যে অর্থনৈতিক সফলতা অর্জন করেন তা তার অসামান্য প্রতিভা ও মেধারই পরিচায়ক। তার রাজস্ব ব্যবস্থায় ভুমিকা ৪ ভাগে ভাগ করা যাই। যথা-ক. পোলহ - যা সবসময় আবাদ হত, খ. পরোতি - যা বৎসরের কিছু সময় পতিত রাখা হত, গ. তেহার - যা তিন চার বৎসর পতিত থাকত, ঘ.বন যার - যা বৎসরের অধিক সময় পতিত থাকতো। 




এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url